Wednesday, January 8, 2014

আমরা অনেক কিছুই দেখেছি। দেখেছি রাজিবের খুন। দোষ সোজা জামাত শিবিরের। তাদের নিষিদ্ধ করা দরকার। কিন্তু তারপর? যখন প্রমাণ হল যে এইটা প্রেমঘটিত সমস্যা, সবাই চুপ।

আমরা অনেক কিছুই দেখেছি।
দেখেছি রাজিবের খুন। দোষ সোজা জামাত শিবিরের। তাদের নিষিদ্ধ করা দরকার। কিন্তু তারপর? যখন প্রমাণ হল যে এইটা প্রেমঘটিত সমস্যা, সবাই চুপ।

দেখেছি 'দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার' বিশ্বজিতের হত্যা। অপরাধীরা কেউই নাকি ছাত্রলীগের কেউ না।

দেখেছি ত্বকীর খুন। সব দোষ শিবিরের। শাহবাগের নারায়নগঞ্জ শাখার মূল উদ্যোক্তা রাফির ছেলে হওয়াতেই নাকি তাকে খুন করা হয়েছে। এরপর? শামীম উসমানের দিকে আঙ্গুল উঠার পর সবাই চুপ।

দেখেছি আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের ভাই মেরাজ খুন। এইখানেও আঙ্গুল প্রথমে জামাত শিবিরের দিকে। তারপর? ছিনতাই কারীর হাতে খুন হওয়ার বিষয় জানার পরে, এইখানেও সবাই চুপ।

এইরকম আলোচিত প্রায় সব হত্যাকাণ্ডের দোষ প্রথমে জামাত শিবিরের ঘাড়ে। আসল ঘটনা বের হলে সবাই চুপ। মানবাধিকার ব্যবসায়ীরা বসে থাকেন জামাত শিবিরের ঘাড়ে দোষ চাপানোর জন্য।

এইসব থেকেই প্রমাণিত হয়, আসলে কারা কি করছে। কারো কারো কাছে নাকি তথ্য আছে। কি তথ্য আছে, এই তথ্যের উৎস কি, তা নিয়ে আর কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না।

বাকী মন্তব্যের আগে কিছু খবরের শিরোনাম দেখা যাক আগে-

১) ০১ জানুয়ারি, ২০১৪
বাসে পেট্রল ছুড়ে আগুন দেওয়ার চেষ্টা, ছাত্রলীগের ৩ নেতা-কর্মী আটকhttp://www.kalerkantho.com/online/country-news/2014/01/01/37103#sthash.iCqSCWVJ.dpuf

২) ৩ জানুয়ারী, ২০১৪
অবরোধের সময় পুঠিয়ায় সড়ক ডাকাতি করতে গিয়ে ছাত্রলীগ কর্মী আটক
http://www.deshsangbad24.com/অবরোধের-সময়-পুঠিয়ায়-সড়ক-ড/

৩) ৩০ নভেম্বর ২০১৩
ককটেল বিস্ফোরণের সময় বাগেরহাটে দুই ছাত্রলীগ কর্মী আটক
http://bartalive24.com/bangladesh-news/14786-2013-12-01-14-11-45

৪) ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩
বিচারপতি ও সংখ্যালঘুদের বাড়িতে আওয়ামী লীগ কর্মীদের হামলা, আটক ৪
http://bangla.irib.ir/2010-04-21-08-29-09/item/56586-বিচারপতি-ও-সংখ্যালঘুদের-বাড়িতে-আওয়ামী-লীগ-কর্মীদের-হামলা,-আটক-৪

৫) ১৬-১২-২০১৩
দেবহাটায় হিন্দু বাড়িতে যুবলীগ সন্ত্রাসীদের আগুন
http://loksamaj.com/index.php?action=page&categoryid=21&postid=33401#.UswQAtIW1ZE

৬) ২৩ ডিসেম্বর ২০১৩
পিকেটার সেজে চাঁদাবাজির সময় ছাত্রলীগ কর্মী আটক
http://www.bd-pratidin.com/2013/12/23/33761

৭) ৪ জানুয়ারী ২০১৪
স্কুলে আগুন দেয়া ঠেকান: নাহিদ
তিনি বলেন, “স্কুলগুলোতে আগুন দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের মধ্য দিয়ে তারা স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চায়।”
http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article724381.bdnews
এইবার আজকের দুটি সংবাদের দিকে দৃষ্টি দেয়া যাক

স্কুলে আগুন লাগাতে গিয়ে ধরা খেলেন প্রধান শিক্ষক
জামায়াত-শিবিরের ওপর দোষ চাপাতে নিজের স্কুলে নিজেই আগুন দিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী বগুড়ার এক প্রধান শিক্ষক। স্কুলের দফতরি বাবুল হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষক আবদুল মান্নান বগুড়া সদরের কলোনী এলাকার বাসিন্দা এবং বগুড়া পৌরসভার ১২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কর্মী।
http://www.natunbarta.com/outside-dhaka/2014/01/07/62944/স্কুলে+আগুন+লাগাতে+গিয়ে+ধরা+খেলেন+প্রধান+শিক্ষক

সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন সৈয়দ আশরাফ
জামায়াত-বিএনপি সন্ত্রাসীরা সংঘ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালাচ্ছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদ জনিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
http://www.sheershanews.com/2014/01/07/20950

অনেক সংবাদ, লিংক দেয়া হলো। এইবার কাজের কথায় আসি,

১ নাম্বার থেকে ৬ নাম্বার খবরগুলোর খবরগুলোর ব্যাপারে সত্যি করে বলুন তো, যদি এইসব লীগকর্মী ধরা না পড়তো, তাহলে আমাদের মিডিয়া কি বলতো?

একাত্তর, সময়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, এটিএন, চ্যানেল আই, প্রথম আলো, যুগান্তর থেকে শুরু করে অন্তত ৮০% এর বেশি মিডিয়া বলতো যে এইসব জামাত শিবিরের কাজ। সাম্প্রদায়িক হামলা (আসলে হামলার কারণ কি সাম্প্রদায়িক বা ধর্মীয়, নাকি রাজনৈতিক তা নিয়ে কিন্তু কারো মাথাব্যথা নেই), বাসে আগুন, ককটেল বিস্ফোরণ ইত্যাদি ইত্যাদি সব নাকি জামাত শিবিরের কাজ।

নিজেদের দলের লোকজন হিন্দু বাড়িতে, মন্দিরে হামলা করছে আর আশরাফ সাহেব বলছেন সব দোষ বিএনপি আর জামাত শিবিরের। অবশ্য উনার কথায় কিছু মনে করার নাই। কারণ উনিই তো বলেছিলেন, সুপ্রীমকোর্টে নাকি বিএনপি-জামাত হামলা করেছিল গত ২৯ ডিসেম্বর'১৩। সো উনাকে কি উপাধি দেয়া যায় তা আপনারাই বলেন।

এর পরে আসুন আমাদের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী (সরকারী উদ্যোগে প্রশ্ন ফাঁসের জন্য জাতি উনাকে চিরদিন মনে রাখবে) সাহেবের কথায়। “স্কুলগুলোতে আগুন দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংসের মধ্য দিয়ে তারা স্বাধীনতা যুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চায়।” কাহিনী কি? আজতো আওয়ামী লীগের এক কর্মী তার নিজের স্কুলে আগুন দিল। তাহলে কি আওয়ামী লীগ ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংস করতে চায়?

যদি কোন অপরাধের ক্ষেত্রে ঘটনাস্থলেই অপরাধী হাতে নাতে ধরা না পড়ে, তাহলে আমাদের মিডিয়া, মন্ত্রী, এমপি এবং চুশীল সমাজের দৃষ্টিতে অপরাধী হচ্ছে জামাত শিবির। তদন্ত করবে দূরের কথা, আগে স্থানিয় জামাত-শিবিরের বেশ ক'জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হবে।

অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, আমি হঠাৎ এইভাবে জামাত শিবিরের দালালি শুরু করলাম কেন। মজলুমের পাশে দাঁড়ানো প্রতিটি মুসলমানের জন্য ফরজ। বর্তমান বাংলাদেশে জামাত শিবির যে মজলুম, তা নিয়ে পাগলও বিতর্ক করতে আসবে না। অন্তত উপরের ঘটনা গুলো প্রমান করে যে জামাত শিবির মজলু কি না।

আমি সবসময় সত্যের পক্ষে, মজলুমের পক্ষে থাকার চেষ্টা করি এবং থাকবো ইনশাআল্লাহ্‌।

আল্লাহ আমাদের সঠিক বিষয়টি বুঝার তাওফিক দিন।
আমীন।

No comments:

Post a Comment