Wednesday, February 5, 2014

ফেসবুক আইডি হ্যাক হওয়ার ৪ কারণ



ঢাকা: বর্তমান যুগে ফেসবুক প্রত্যেকের নিত্যদিনের সঙ্গী। প্রতিদিন অন্তত একবার করে ফেসবুক না দেখলে যেন চলেই না। আবার অনেকে তো প্রতি মুহূর্তেই মোবাইল ও বিভিন্ন উপায়ে ফেসবুকে থাকছেন। অর্থাৎ প্রতিদিনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে গেছে ফেসবুক। তারচেয়েও বড় ব্যাপার হলো, ফেসবুকে ব্যক্তিগত অনেক তথ্য সংরক্ষিত থাকে। এছাড়াও আপনার ফেসবুকের নিরাপত্তা এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, কেউ তা হাতে পেয়ে গেলে এর মাধ্যমে কেবল আপনার সম্পর্কে তথ্য চুরিই নয়, বরং আপনার চিত্রটাকেই সবার সামনে নষ্ট করে ফেলতে পারে।

ফেসবুক অ্যাপ্লিকেশন, কজ এবং বিজ্ঞাপন
ফেসবুকের অসংখ্য অ্যাপ্লিকেশনের অধিকাংশই নিরাপদ নয়। কিছুদিন আগে ফার্মভিলের মতো সর্বাধিক জনপ্রিয় কিছু অ্যাপ্লিকেশন ও গেমও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুসারে স্বীকার করেছে যে, তারা বিজ্ঞাপনের স্বার্থে তাদের ব্যবহারকারীদের কিছু তথ্য দিয়েছে। এছাড়াও অসংখ্যা অ্যাপ্লিকেশনের ভাণ্ডারে হঠাৎই হয়তো এমন কোনো অ্যাপ্লিকেশন থেকে আপনাকে রিকোয়েস্ট বা ইনভাইট পাঠানো হলো যেটা পাসওয়ার্ড চুরি করে। কিন্তু আপনি তা কখনোই ধরতে পারবেন না।

আসল কথা হলো, এসব অজানা-অচেনা কজ, অ্যাপ্লিকেশন ইত্যাদি থেকে যত দূরে থাকা যায় ততোই ভালো। অন্যথায় এসবের মাধ্যমে আপনার পাসওয়ার্ড বা অন্যান্য ব্যক্তিগত তথ্যাদি হ্যাকারদের হাতে পড়লে আপনার অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণই চলে যেতে পারে।

ফেসবুক ই-মেইল ফিশিং
একটু অসতর্ক হলেই ই-মেইলের মাধ্যমেও ফেসবুকের পাসওয়ার্ড চুরির শিকার হতে পারেন। অনেক চতুর হ্যাকাররা ঠিক ফেসবুক নোটিফিকেশনের মতো করে ই-মেইল তৈরি করে এবং তা ফেসবুকের মতোই কাছাকাছি কোনো ডোমেইন থেকে ই-মেইল আকারে পাঠায়। এসব ই-মেইলে থাকা লিংকগুলো ক্লিক করলে যে সাইটটি ওপেন হবে সেটাও অবিকল ফেসবুকের মতোই হবে। কিন্তু মূলত এটি ফিশিং সাইট।

এর ফলে, আপনার ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড নিশ্চিন্তে হ্যাকার মশাইরা পেয়ে যাচ্ছে। এসব আক্রমণ থেকে বাঁচতে সবসময় ই-মেইলের লিংকে ক্লিক করার আগে দেখে নেয়া উচিৎ তা facebook.com ঠিকানাতেই যাচ্ছে কি না। কারণ, যতো যাই হোক। ফেসবুকের ঠিকানা ঠিক থাকলে লগইন করতে আর কোনো ঝামেলা নেই।

ফেসবুক শেয়ার বাটন
থার্ড পার্টি সাইটের বিভিন্ন কন্টেন্ট যেমন- পোস্ট, ছবি, ভিডিও ইত্যাদি ফেসবুকে শেয়ার করার জন্য শেয়ার বাটন যুক্ত করা থাকে। মূলত ব্যবহারকারীর সুবিধার্থেই এই ফেসবুক শেয়ার বাটনগুলো যুক্ত করা হয়। কিন্তু এই শেয়ার বাটনও আপনার ফেসবুকের পাসওয়ার্ড চুরির কারণ হতে পারে।

অনেক হ্যাকাররা তাদের সাইটে শেয়ার বাটন নিজেরা যোগ করে এবং সেখানে ক্লিক করলে যেই সাইট ওপেন হয়, সেটা ফেসবুকের মতো দেখতে হলেও তা আসলে ফিশিং সাইট। আপনি ফেসবুক মনে করে লগইন করার চেষ্টা করতে গেলেই আপনার পাসওয়ার্ড চলে যাবে তাদের হাতে। এক্ষেত্রেও আপনি যদি সতর্ক থাকেন তাহলে ফিশিং সাইট এড়াতে পারবেন। কেবল খেয়াল রাখবেন যেই লিংকে ক্লিক করছেন, তা facebook.com কি না।

পাবলিক কম্পিউটারে লগইন
সাইবার ক্যাফে বা এ জাতীয় পাবলিক কম্পিউটারে লগইন করার সময়ও সতর্ক থাকতে হবে। সাইবার ক্যাফে থেকে লগইন করার সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হচ্ছে কি-লগার। অনেক সফটওয়্যার আছে যেগুলো কম্পিউটারে থাকলে আপনি ব্রাউজিং করার সময় ব্যবহৃত সব পাসওয়ার্ড সেইভ করে ফেলে। তবে ফায়ারফক্স বা ক্রোম ব্যবহার করলে এই ঝুঁকি থাকে না বলেই জানা গেছে।

তবে আরেকটি সাধারণ ভুল অনেকেই করেন তাহলো remember me/keep me logged in বক্সে টিক দিয়ে লগইন করেন। অথবা পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করার অনুমতি চাইলে অনেকে না বুঝেই বা তাড়াহুড়োয় সেভ করে ফেলেন। এতে করে আপনার অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড চুরি না হলেও আপনার অ্যকাউন্টে অন্য কেউ অ্যাক্সেস পেয়ে যাচ্ছে যা সমানভাবেই ক্ষতিকর।

আমাদের সবারই উচিৎ কেবল ফেসবুকই নয়, বরং ই-মেইলসহ যাবতীয় সব পাসওয়ার্ড নিরাপদ রাখার ব্যাপারে সতর্ক হওয়া এবং বিশেষ করে কোনো সাইটে লগইন করার আগে বা পাসওয়ার্ড দেয়ার আগে এবং ই-মেইলে আসা লিংকে ক্লিক করার আগে নিশ্চিত হয়ে নেয়া যে ই-মেইলটি বা ওয়েবসাইটটি ফিশিং সাইট নয়। তাহলে ফেসবুকসহ যাবতীয় সব পাসওয়ার্ড নিরাপদ রাখা সম্ভব হবে।

No comments:

Post a Comment